Posts

Showing posts from June, 2015

ম্যাকলয়েডগঞ্জ ১

Image
বেড়ানোর গল্প ঠিক কোথা থেকে শুরু হয়? বেড়াতে যাওয়ার ইচ্ছে মনের মধ্যে জাগার মুহূর্ত থেকে? বাসের টিকিট কাটা আর হোটেল বুকিং হয়ে যাওয়ার পর থেকে? নাকি সেই জায়গায় পৌঁছোনো থেকে? শেষেরটা যদি হয় তাহলে কেজরিওয়ালের গল্পটা বাদ পড়ে যাবে, কারণ সে গল্পটা শুরু হয়েছিল ম্যাকলিওডগঞ্জে পৌঁছনোর পাঁচশো কিমি পথ আর দশঘণ্টা বাকি থাকতেই। যখন আমরা আই এস বি টি-র বাসে উঠে নিজেদের সিট বেছে বসলাম আর কানের কাছে শুনলাম, “ম্যাডাম, ওহ্‌ উইন্ডো সিট মেরা হ্যায়।” অত্যন্ত বিরক্ত হয়ে তাকিয়ে দেখি আমার দিকে মুখ্যমন্ত্রী তাকিয়ে হাসছেন। সিট ছেড়ে দিয়ে অর্চিষ্মানের দিকে সরে এসে বললাম, “লোকটাকে দেখলে?” বলাই বাহুল্য, ভদ্রলোক কেজরিওয়াল নন। খালি দৈর্ঘ্যপ্রস্থউচ্চতায়, মুখের আদল, গোঁফের কায়দায় কেজরিওয়ালের সঙ্গে তাঁর আশ্চর্য মিল। আমার ভদ্রলোকের সঙ্গে আলাপ করা ইচ্ছে ছিল। কিন্তু তারপর দেখলাম ওঁর কথা বলার চাহিদাটা প্রায় প্যাথোলজিক্যাল। অন্তত চোদ্দটা ফোন করলেন, তারপর বৃহস্পতিবার রাতে টিকিট কাউন্টারে এত ভিড় কেন সেই নিয়ে নিজের মনেই বিড়বিড় করে বিস্ময় প্রকাশ করতে লাগলেন। একবার শুরু করলে পাছে সারারাত কথা বলে যেতে হয়ে

টা টা বাই বাই/ আবার যেন দেখা পাই

বসের অনুমতি নেওয়া শেষ, বাসের টিকিট কাটা শেষ, হোটেলে ফোন করে ঘর বুকিং করা শেষ, অফিসের কাজ মুলতুবি রেখে নোটখাতার পেছনের পাতায় লিস্ট বানানোও শেষ। টুথব্রাশ থেকে শুরু করে হাওয়াই চটি। ও হ্যাঁ, আর অ্যাভোমিন। অ্যাভোমিন ভুললে চলবে না। একটা স্টার দিয়ে রাখি বরং। গুড। এবার শুধু অফিস থেকে বাড়ি ফেরা, লিস্ট দেখে দেখে ধুপধাপ করে জিনিসপত্র ব্যাকপ্যাকে পোরা, আর ওলা/মেরু/উবার যে কোনও একটাকে ডেকে রাত দশটা নাগাদ আই এস বি টি-তে পৌঁছোনো। বাসে উঠে ঘুম, ঘুম ভাঙলে কাল সকালে ম্যাকলিওডগঞ্জ। ভীষণ আনন্দ হচ্ছে। সব বেড়াতে যাওয়ার আগেই হয়, কিন্তু এবার যেন আরও বেশি হচ্ছে। ইদানীং আমার মনটা বিশেষ ভালো যাচ্ছিল না। তাতে ঘাবড়ানোর কিছু নেই অবশ্য । নিরবচ্ছিন্ন মন ভালো থাকলেই বরং চিন্তার কথা। মাঝে মাঝে খারাপের ছিটে দেওয়া মোটের ওপর ভালো, আমার মতে মনের প্যাটার্ন এইরকমই হলেই বেস্ট। কিন্তু গত ক’দিনে সে প্যাটার্নে খানিক বদল টের পাচ্ছিলাম। ছিটেগুলো ক্রমেই বাড়তে বাড়তে গোটা মন অধিকার করে ফেলার চেষ্টা করছিল। হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ আবিষ্কার করছিলাম দম বন্ধ করে আছি। কাঁধদুটো শক্ত হয়ে, সিঁটিয়ে প্রায় কানের কাছে উঠে এসেছে। চারদিকে ঘি

যোগদিবসে কাবুলভ্রমণ

Image
বছরের মাঝখানে পৌঁছে আমার বিবেক জেগে উঠেছে। আমার এককালের প্রাতর্ভ্রমণের অভ্যেস, অব্যবহারে অযত্নে যা প্রায় বিস্মৃত হয়েছিল, তাকে আবার ঝেড়েঝুড়ে রোজকার জীবনে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করছি। তাতে সারাদিন বেশি এনার্জি, সকালবেলার মুক্তবায়ু সেবন (এটা অবশ্য বিতর্কযোগ্য। দিল্লির বায়ু সেবন করার থেকে বর্জন করাই স্বাস্থ্যের পক্ষে ভালো বলেন কেউ কেউ।) আরও যা যা প্রত্যাশিত উপকার হওয়ার ছিল সে সব তো হয়েছেই সঙ্গে সঙ্গে কিছু অপ্রত্যাশিত উপকারও হয়েছে। এক, পাড়ার সবক’টি কুকুরবেড়ালকে আমি আলাদা আলাদা করে চিনতে শিখেছি। বাদামি, কালো, ডোরাকাটা, সাদা, রোগা, মোটা তো বাইরে থেকে দেখেই বোঝা যায়। কিন্তু কে শান্ত, কে দুষ্টু, কে বাধ্য বা বদমাশ সে সবও এ ক’দিনে পরিষ্কার হয়ে উঠেছে। আমার হাঁটার রুটে এক পশুপ্রেমী ভদ্রলোকের বাড়ি পড়ে। ভোর না হতেই তাঁর বাড়ির সামনে চারপেয়েদের মেলা বসে যায়। ওই জায়গাটা আমি আজকাল একটু আস্তে হাঁটি। প্রথমত, সাবধানতার খাতিরে। দ্বিতীয়ত, পশুচরিত্র পর্যবেক্ষণ করার লোভে। আগে আমি ভাবতাম কুকুর বেড়াল ইত্যাদি প্রজাতিগত পার্থক্য বাদ দিলে সব চারপেয়েই আসলে একই রকম। ঘুম পেলে ঘুমোয়, ক্ষিদে পেলে খায়। এখন দেখছি তাদের স্ব

সাপ্তাহিকী

Anybody can sympathise with the sufferings of a friend, but it requires a very fine nature to sympathise with a friend's success.                                                          ---Oscar Wilde আমি বেড়াল। আপনি কী? ছবিতে হলুদ রঙের বাড়াবাড়ি দেখলে সেটাকে মোটামুটি নিশ্চিন্ত হয়ে ভ্যান গঘ বলে চালিয়ে দেওয়ার টোটকাটা এক আর্টবোদ্ধা বন্ধুর কাছ থেকে পেয়েছিলাম। অন্য কয়েকজন শিল্পীর ছবি চিনতে পারার টোটকা এঁরা দিচ্ছেন। ভিনসেন্ট ভ্যান গঘের আঁকা আত্মপ্রতিকৃতি তো সকলেই দেখেছেন, কিন্তু ফোটোগ্রাফ দেখেছেন কি? পনেরো মিনিটের খ্যাতির দুনিয়ায় পনেরো বছরেরও বেশি সময় ধরে সেরার আসন আগলে রেখেছেন যিনি।    বেডরুমে, বাথরুমে, রান্নাঘরের কাউন্টারে, সিঁড়িকোঠায় এমনকী খোলা মাঠেও লোকে ওসব করে শুনেছি। তা বলে মহাকাশে? মানুষ পড়ে গেলে যত হাসি পায় রোবট পড়ে গেলেও কি ততটাই হাসি পায়? পরীক্ষা করে দেখুন। কী টিপ! সুপারমার্কেটের শয়তানি। সুইডেন বেশ ভালো দেশ এটা আগেও শুনেছিলাম। পৃথিবীর সবথেকে বিখ্যাত সমীকরণ কোনটা জিজ্ঞাসা করলে সবাই বলতে পারবেন। কিন্তু সেই সমীকরণটার মানে

Things I am Loving

Image
গত শনিরবি হঠাৎ বলা নেই কওয়া নেই বৃষ্টি নেমেছিল দিল্লিতে। একেবারে মেঘ ডেকে , বিদ্যুৎ চমকে , ঝমঝম আওয়াজ করে , সোঁদা মাটির গন্ধ ছেড়ে। আমি তো অবাক। জুনের শুরুতে বৃষ্টি ? দিল্লিতে ? তারপর মা যখন জানালেন যে আবহাওয়া অফিস থেকে বলেছে এ বছর বৃষ্টি কম হবে , অন্যান্য বছরের তুলনায় মোটে নাকি অষ্টাশি শতাংশ , তখন রহস্যটা পরিষ্কার হয়ে গেল। এখন আবার যে কে সেই হয়ে গেছে , কিন্তু সেই বৃষ্টির জের বেশ ক ’ দিন চলেছিল। বেশ ক ’ দিন সারাদিন মেঘেরা আড়াল তুলে সূর্যকে ঢাকা দিয়ে রেখেছিল , বেশ ক ’ দিন রাতে এসি নিভিয়ে জানালা খুলে ঘুমোনো গিয়েছিল। তাতে মাঝরাতে ঘুম ভাঙছিল ঠিকই , কিন্তু সেটা মশার কামড়ে , গরমে ঘেমে নয়। আর ওই সময়টাতেই এই পোস্টটার কথা মগজে আসতে শুরু করেছিল। ‘ থিংস আই অ্যাম . . . ’ নামের ট্যাগটা বহুদিন একা পড়ে আছে , সেটাকে এই বেলা হৃষ্টপুষ্ট করে তোলা যাক। আচ্ছা , ভালো ভালো সব ব্যাপার ঘটে বলে মন ভালো থাকে , নাকি মন ভালো থাকে বলেই সাধারণ নিত্যনৈমিত্তিক ব্যাপারগুলোও ভালো বলে ঠেকে ? যাকগে এসব জটিল প্রশ্ন নিয়ে ভেবে মাথাগরম করে লাভ নেই , সোজা লিস্টে ঝাঁপানো যাক। ১। লিস্টের প্রথম দুটো জিনিসই ওপরে